সুন্দর উজ্জ্বল এবং স্বাস্থবান ত্বক লাভের জন্য নিচের তিনটি শর্ট টিপস আপনি মেনে চলতে পারেনঃ
১। সব সময় ত্বক পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখুনঃ
প্রতিনিয়ত ভয়াবহ হারে আমাদের ত্বক ধংসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এবং এটা ঘটছে আমাদের অজান্তে। এভাবে অনেক লম্বা সময় ধরে যখন এটা হতে থাকবে, ততোই আমাদের ত্বক ও স্বাস্থ্য নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন হবে। এমন পর্যাইয় আমরা যাব যখন আর কোন উপায় থাকবেনা ফিরে আসার। এজন্য শরীরের ভিতর ও বাহির এই দুই দিক থেকেই যত্ন নিতে হবে সচেতনভাবে। উভয়টিই পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। তাহলেই সুন্দর ত্বক ও সুস্থ দেহ পাওয়া সম্ভব। ত্বক পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য নিয়মিত ফেসওয়াস ব্যবহার করা প্রয়োজন। যেটা আপনার স্কিনে স্যুট সেটাই ব্যবহার করুন। প্রয়োজনে কয়েকটা ফেসওয়াস ট্রায়াল দিয়ে দেখতে পারেন। এখন বাজারে অনেক ভালো ব্রান্ডের ফেসওয়াস পাওয়া যায়। সেখান থেকে আপনার পছন্দসই পণ্যটি বেছে নিন। অনেকে আবার ক্লিনসার ব্যবহার করে থাকেন। ক্লিনসার ব্যবহার করার সময় খেয়াল রাখতে হবে, যেন ক্ষতিকর SLS/SLES সেখানে না থাকে। কারণ SLS/SLES এর ব্যবহারের ফলে ত্বকের যে স্বাভাবিক তেল থাকে, যা ত্বকের ভেতরর কোষ থেকে উৎপন্ন হয়; সেটাকে সরিয়ে ফেলে। ফলে ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। হারবাল উপাদান ব্যবহার করে পারেন। এতে ত্বকের ক্ষতি হয়না। যাদের ত্বক তৈলাক্ত, তারা নিমের তৈরি মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন। আর যাদের ত্বক শুষ্ক, তারা মধু এবং গোলাপজল ব্যবহার করতে পারেন। নিয়মিত অল্প পরিমাণে ক্লিনসার ব্যবহার করুন। এক্ষেত্রে আপনি জেনে অবাক হবেন যে, অয়েল বেসড ক্লিনসার কিন্তু তৈলাক্ত ত্বকের জন্য অনেক বেশী কার্যকরী। কারণ এটা খুব হাল্কা মাত্রার, সহজেই ত্বকের ময়া এবং মরা কোষ দূর করে দেয়। এছাড়াও প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। সেইসাথে ডেটক্স সম্বলিত খাবার খেতে হবে। যেমনঃ ত্রিফলা, এয়ালোভেরা ইত্যাদি।
২। প্রয়োজনে চিকিৎসকের স্বরণাপন্ন হউনঃ -
আয়ুর্বেদীয় শাস্ত্র অনুযায়ী, যদি ত্বকের কোন সমস্যা হয়, এর পেছনে অবশ্যই স্বাস্থ্যগত কোন সমস্যা আছে বলে মনে করা হয়। শরীরের ভেতরে সমস্যা থাকলেই সেটা ত্বকে এসে প্রভাব ফেলে। কারণ শরীরের রোগের কারণে যে ত্বকের সমস্যা সৃষ্টি হয়, সেটা খালি ত্বকের উপরে যত্ম নিয়ে ঠিক করা যায়না। যেমনঃ ধরুন হলুদের কথা। অতি প্রাচীনকাল থেকেই হলুদ বিভিন্ন আয়ুর্বেদীয় পথ্যে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কারণ হলুদ ব্যবহারে শরীরের অনেক রোগ ভাল হয় এবং এন্টিবডি হিসেেবে কাজ করে। প্রাচীনকাল থেকে যে সমস্ত বিষয়ে পথ্য হিসেবে হলুদ ব্যবহার হয়ে আসছে তাহলো, ক্ষত বা ইনজুরী হলে দুধের মধ্যে হলুদ মিশিয়ে খাওয়ালে খুব দ্রুত ক্ষত শুকিয়ে যায়। কঠিন রোদে মুখ এবং হাত পূড়ে কালো হয়ে গেলে সেখানে হলুদ বেটে মাখলে তা দূর হয়। ঠোট ফেটে গেলে সেখানে ঘি মাখলে ফাটা দূর হয়। হলুদ খেলে পেট পরিস্কার হয়, ইত্যাদি।
৩। ত্বকের যত্নে নিয়মিত হউন, সেই সাথে ত্বকের সুরক্ষা নিশ্চিত করুনঃ
ত্বকের যত্ন নিতে হবে নিয়মিত। অনিয়মিত ত্বকের যত্নে কোন লাভ নেই। একদিন ২ ঘন্টা ধরে রুপচর্চা করলেন, কিন্তু বাকি তিনদিন কোন খবর নেই, এরকম হলে আসলে কোন উপকার পাওয়া যাবেনা। এর চেয়ে সময় কমিয়ে ৫ মিনিট করে রুপচর্চা করুন, কিন্তু প্রতিদিন করুন। এই নিয়মিত অভ্যাস আপনার অনেক উপকারে আসবে। ত্বকের ব্যাপারে বাস্তবতাকে মেনে নিতে হবে। বয়স হলে ত্বকে সেটার ছাপ পড়বেই। আপনি যদি এখন আশা করেন, আপনার বয়স বাড়বে কিন্তু ত্বক সবসময় তরূন থাকবে, তাহলে আপনি আসলেই বোকার রাজ্যে বসবাস করছেন। কারণ এটা কখনই সম্ভব নয়। যেটা সম্ভব তাহলো, ত্বককে যতদূর সম্ভব ভাল, সুন্দর ও সুস্থ্য রাখা। শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যদি ভাল থাকে, তাহলে ত্বক এমনিতেই ভাল হয়ে যায়। চুলের সমস্যার কারণে আলমন্ড তেল, নারিকেল তেল ইত্যাদি ব্যবহারের মাধ্যমে চুলের সমস্যাগুলো দূর করা যায়। এছাড়াও দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য নিয়মিত আমলকি, তুলসি খেতে পারেন, সেই সাথে ত্বকেও ব্যবহার করতে পারেন। এতে বাহ্যিক এবং আভ্যন্তরীণ দুদিক থেকেই প্রতিরোধ গড়ে উঠবে।
যতদূর সম্ভব প্রাকৃতিকভাবে প্রাপ্ত ভেষজ, ফলাদি ইত্যাদি ব্যবহার করুন। আর যদি সেটা সম্ভব না হয়, তাহলে বাজারে অনেক অর্গানিক পণ্য এখন সুলভ মূল্যে পাওয়া যাচ্ছে। সেখান থেকে ভাল ব্রাণ্ডের পণ্য কিনে ব্যবহার করলেও আশা করা যায় উপকার পাওয়া যাবে।
লেখাটির ব্যাপারে আপনার কি মতামত তা নিচে কমেন্টে জানান। আপনার মতামত আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।